ভাবসম্প্রসারণ পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি

ভাবসম্প্রসারণ
পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি


মূলভাবঃ

ইংরেজিতে প্রবাদ রয়েছে , “ the man is maker his own fortune ”

 পৃথিবীতে কোন মানুষই সৌভাগ্য নিয়ে জন্মগ্রহন করে না । সৌভাগ্য সকলেরই কাম্য । কিন্তু এই সৌভাগ্য অনায়াসলব্ধ নয় । একে অর্জন করতে হয় নিরলস শ্রম ও একনিষ্ঠ সাধনায় ।  

সম্প্রসারিত - ভাবঃ 

শ্রমকে উন্নতির চাবিকাঠি বলা হয় । প্রতিষ্ঠা , খ্যাতি , প্রতিপত্তি , যশ সুনাম , মর্যাদা এসব ত্রিবেণী ত্রিধারার দুর্বার স্রোতমুখে টিকে থাকার জন্যে প্রয়ােজন শ্রম ও কঠোর সাধনা ।

সংস্কৃতে একটা কথা আছে দৈবনং দেয় মিতি কাপুরুষং বদন্তিং ” অর্থাৎ দৈবলব্ধ অর্থের গল্প কাহিনী দুর্বল কাপুরুষের স্বপ্নবিলাস মাত্র । পৃথিবীতে এমন একটি জিনিসও নেই যা শ্রমলব্ধ নয় । তাই , জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শ্রমের কোন বিকল্প নেই । জীবনে সফলতা অর্জনের জন্যে শ্রম অপরিহার্য ।  অন্যথায় ব্যথতা এসে জীবনকে অক্টোপাসের মতাে ঘিরে ফেলে । 

কথায় বলে , পরিশ্রমে ধন আনে পূণ আনে সুখ আনে একথা তর্কাতীতভাবে সত্য । শ্রম বিমুখতা ও অলসতা জীবনে বয়ে আনে নিদারুণ অভিশাপ ।  নিরন্তর ও নিরলস শ্রমে জীবনাকাশ থেকে দারিদ্র্যের ঘনঘটা দূর হয়ে সফলতার নবীন সূর্যালােক ও উদ্ভাসিত হয়ে উঠে । তাই শ্রমেই সফলতা , শ্রমেই সুখ , শ্রমেই জীবন ।  একমাত্র শ্রম শক্তির মাধ্যমেই জীবনে অর্জিত হয় কাঙ্খিত সাফল্য , স্তিতি ও পরিপূর্ণতা । নিরলস শ্রম সাধনায় সাফল্য অর্জন করে জীব জগতের মধ্যে মানুষ শ্রেষ্ঠত্বের আসন দখল করেছে । শ্রম জীবনকে বদলে দেয় । শ্রমের মাধ্যমে সাফল্যের চরম শিখরে পৌছানাে সম্ভব । শ্রম এনে দিতে পারে শান্তিতে বেঁচৈ থাকার অনুপ্রেরনা । এক মাত্র শ্রমের মাধ্যমে জীবনে পরিতৃপ্তি পাওয়া সম্ভব । শ্রমই জীবনে চলার জন্য আসল চালিকাশক্তি । শ্রমের মাধ্যমে শরীরের আসল পরিচর্চা হয়ে থাকে । শ্রমের কোন বিকল্প নেই ।আধুনিক বিশ্বের প্রত্যেকটি উন্নতজাতির উন্নয়নের ইতিহাস পর্যালােচনা করলে দেখা যায় , তারা প্রত্যেকই নিরন্তর প্রচেষ্টা ও শ্রম সাধনার বিনিময়ে উন্নতির চরম শিখরে আরােহন করতে সক্ষম হয়েছে ।

 সুতরাং জীবনকে সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক ভাবে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে শ্রম ব্যতিত অন্যকোন সহজ পথ নেই ।


মন্তব্যঃ 

সৌভাগ্যের সূচনার জন্যে তাই মানুষের নিরন্তর পরিশ্রম করা প্রয়ােজন ।

যে জাতি পৃথিবীতে যত বেশি পরিশ্রমী সে জাতি তত উন্নত । ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত পরিশ্রম এবং সাধনাই জাতির সৌভাগ্যের নিয়ামক । 


একই ভাবসম্প্রসারণের ভিন্ন প্রতিলিপন

★ পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি


কোনােকিছু অর্জন করতে হলে নিরলস পরিশ্রম ও একনিষ্ঠ সাধনার কোনাে বিকল্প নেই। পরিশ্রম করেই বিরূপ ভাগ্যকে আয়াত্ত করতে হয়। ভাগ্যে বিশ্বাসী লােক অলস এবং শ্রমবিমুখ হয়। ভাগ্যে থাকলে পাব’— এই আশায় কেউ বসে থাকলে জীবনে তার কোনাে উন্নতি হবে না। আসলে সৌভাগ্য নিয়ে কেউ পৃথিবীতে আসে না। কঠিন, কঠোর পরিশ্রম করেই বিরূপ ভাগ্যকে জয় করতে হয়। লক্ষ্য স্থির করে, সঠিক পদ্ধতিতে পরিশ্রম করলে সৌভাগ্য আপনা-আপনি ধরা দেয়। পৃথিবীতে এ পর্যন্ত যারা সফল হয়েছেন, তাদের সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে পরিশ্রমের জাদু। কৃষক ভাগ্যের ওপর বসে থেকে ফসল ফলায় না, তাকে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল উৎপন্ন করতে হয়। তেমনি পরিশ্রম ছাড়া দুনিয়াতে ভালাে কিছু অর্জিত হয় না। আধুনিক বিশ্বের উন্নত দেশগুলাের দিকে তাকালে কিংবা তাদের ইতিহাস পর্যালােচনা করলে দেখা যায়, তারা নিরলস পরিশ্রম করেই উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছেছে। একমাত্র শ্রমশক্তিই তাদেরকে কাক্ষিত সাফল্যের স্বর্ণদ্বারে পৌছে দিয়েছে। অন্যদিকে শ্রমবিমুখ, অলস কত যুবক বেকার হয়ে অভিশপ্ত জীবন কাটাচ্ছে। জীবনে সফলতা অর্জনের জন্য পরিশ্রম অপরিহার্য। যে জাতি যত পরিশ্রমী, সে জাতি তত উন্নত। তাই অযথা ভাগ্যের পেছনে না দৌড়ে, লক্ষ্য স্থির করে সঠিক পদ্ধতিতে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করা উচিত।


একই ভাবসম্প্রসারণের ভিন্ন প্রতিলিপন


★ পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি

মূলভাব : 

সৌভাগ্য নিয়ে পৃথিবীতে কোনাে মানুষের জন্ম হয় না । কর্মের মাধ্যমে তার ভাগ্য গড়ে নিতে হয় । পরিশ্রমই সৌভাগ্য বয়ে আনে ।পরিশ্রমই কল্যাণ বয়ে আনে।পরিশ্রম ছাড়া জীবনে প্রকৃত সফলতা অর্জন করা যায় । কঠোর পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি । 

 ভাবসম্প্রসারন :

 সৌভাগ্য ঈশ্বর প্রদত্ত কোনাে বিষয় নয় , তাকে শ্রমের দ্বারা অর্জন করে নিতে হয় । সৃষ্টিকর্তা মানুষকে শক্তি ও বুদ্ধিমত্তা প্রদান করেছেন পরিশ্রম করার জন্যে । বিনা পরিশ্রম কোনাে কিছু অর্জন করা যায় না । মেধা , বুদ্ধি , কর্মশক্তি ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য মানুষকে অন্যান্য প্রাণী থেকে স্বাতন্ত্র্য দান করেছে । এসব বৈশিষ্ট্যকে কাজে লাগিয়ে , পরিশ্রমের মাধ্যমে মানুষ সফলতা বা সৌভাগ্যের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয় ।  মানবজীবনে সাফল্য লাভ করতে হলে অলসতায় গা না ভাসিয়ে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে । প্রাচীনকাল হতে বর্তমানকাল পর্যন্ত যত মনীষী সাফল্যের স্বর্ণশিখরে আরােহণ করেছেন প্রত্যেকেই কঠোর পরিশ্রম করেছেন । তাইতাে বলা হয় সফলতা অর্জনের মূলে রয়েছে পরিশ্রম ।

অন্যদিকে , মেধা থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ তা কাজে লাগানাের চেষ্টা না করে , তাহলে দুর্ভাগ্য তার জীবনকে অক্টোপাসের মতাে ঘিরে ফেলে । আমরা যদি ভালাে ক্রিকেট খেলােয়াড় হতে চাই তাহলে আমাদেরকে মাঠে অনুশীলন করতে হবে , ঘরে বসে শুধু স্বপ্ন দেখলে হবে । তেমনি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফল হতে হলে শ্রম , সাধনা ব্যতীত বিকল্প কোনাে পথ নেই । তাই বলা হয়ে থাকে , হাত জোড় করে নয় , হাত মুঠো করে নয় , পেতে হলে হাত লাগাতে হবে ।


 মন্তব্য : 

মানুষের যাবতীয় সৌভাগ্যের মূলে রয়েছে তার পরিশ্রম । পরিশ্রমী ব্যক্তি যথার্থই ভাগ্যবান ।



আরো পড়ুন..... 


Comments

Popular posts from this blog

রাষ্ট্র বিজ্ঞান কাকে বলে? || রাষ্ট্র বিজ্ঞান কী? || রাষ্ট্র বিজ্ঞানের বলতে কি বুঝায়? || রাষ্ট্র বিজ্ঞানের সংজ্ঞা দাও? (What is Political Science?)

চাঁদ শব্দের প্রতিশব্দ/ সমার্থক শব্দ কিকি?

GDP ও GNP কাকে বলে? || GDP ও GNP এর মধ্যে পার্থক্য কি?