অর্থনীতি কাকে কি?।৷ অর্থনীতি কাকে বলে || what is Economics?|| অর্থনীতির সংজ্ঞা কি?|| Definition of Economics
অর্থনীতি কাকে কি?।৷ অর্থনীতি কাকে বলে || what is Economics?|| অর্থনীতির সংজ্ঞা কি?|| Definition of Economics.
উত্তরঃ
অর্থনীতি শব্দটি ইংরেজি 'Economics' শব্দের প্রতিশব্দ। Economics শব্দটি গ্রিক শব্দ 'Oikonomia' থেকে উদ্ভূত যার অর্থ গৃহস্থালী পরিচালনা।
গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল বলেছেন, গৃহ পরিচালনা করার বিজ্ঞান হলো অর্থনীতি। তবে সময়ের ব্যবধানে ‘অর্থনীতি’ আর অ্যারিস্টটলের ‘গৃহ পরিচালনা করার বিজ্ঞান’র মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি।
অর্থনীতি এমন একটি পরিবর্তনশীল সমাজ বিজ্ঞান যা মানুষের অসীম অভাব এবং বিকল্প ব্যবহার যোগ্য সীমিত সম্পদের মাঝে সমন্বয় সাধন করে।
Economics is a social science that studies the production, distribution, and consumption of goods and services. Economics focuses on the behaviour and interactions of economic agents and how economies work.
আবার আমরা এভাবে ও বলতে পারি Economics বা অর্থনীতি হলো একটি বিজ্ঞান যা কিভাবে সীমিত সম্পদকে কাজে লাগিয়ে পণ্য ও সেবা উৎপাদন করে তা ব্যবহারের জন্য বন্টন করা হয়, সেটা আলোচনা করে।
Economics can briefly defined as the study of it administration of scarce resources and determinations of employment and income.” অর্থাৎ, স্বল্প উপকরণসমূহের বিতরণ, কর্মসংস্থান, ও আয়ের নির্ধারকসমূহের আলোচনায় হলো অর্থনীতি।
অর্থনীতির সংজ্ঞা (Definition of Economics)
বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ অর্থনীতির সংজ্ঞা বিভিন্নভাবে দিয়েছেন । এই সংজ্ঞাগুলোকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায় বলে পণ্ডিতগণ মত দিয়েছেন।
অর্থনীতির সংজ্ঞার এই তিনটি ভাগ হলো-
১. সম্পদের বিজ্ঞান (Science of Wealth)
২. কল্যাণের বিজ্ঞান (Science of Welfare)
৩. অপ্রাচুর্যের বিজ্ঞান (Science of Scarcity)
এখানে সম্পদের বিজ্ঞান (Science of Wealth) হিসেবে যারা অর্থনীতিকে অভিহিত করেছেন তাঁরা হলেন অ্যাডাম স্মিথ, ডেভিড রিকার্ডো, জন স্টুয়ার্ট মিল প্রমুখ। এই ক্ল্যাসিক্যাল অর্থনীতিবিদগণ ছিলেন অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকের।
অর্থনীতিকে কল্যানের বিজ্ঞান বলে যারা মত দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে প্রধান প্রধান হলেন আলফ্রেড মার্শাল। আলফ্রেড মার্শালকে আধুনিক অর্থনীতির জনক বলা হয়। এছাড়াও ফিশার, পিগু, ডেভেনপোর্ট, ক্যানন, অ্যারো প্রমুখ অর্থনীতিবিদরা অর্থনীতিকে কল্যাণের বিজ্ঞান (Science of Welfare) বলে অভিহিত করেছেন। এই শ্রেণির অর্থনীতিবিদগণকে বলা হয় নিউ ক্ল্যাসিক্যাল অর্থনীতিবিদ।লিয়োনেল রবিন্স হলেন তৃতীয় প্রকারের সংজ্ঞার প্রধান প্রবক্তা। লিয়োনেল রবিন্স প্রদত্ত সংজ্ঞাটি সবচেয়ে বিজ্ঞানসম্মত মনে করেন অনেকে। এটি ত্রুটিমুক্ত না হলেও, এর গ্রহণযোগ্যতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রফেসর লিয়োনেল রবিন্স, ক্রেয়ারন্ক্রস প্রমুখ অর্থনীতিবিদগণ অর্থনীতিকে ‘অপ্রাচুর্যের বিজ্ঞান’ (Science of Scarcity) বলে অভিহিত করেছেন।
#এল.রবিন্স এর প্রদত্ত সংজ্ঞাটি বেশিরভাগ আধুনিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তিনি বলেন,
"অর্থনীতি মানুষের অসীম অভাব ও বিকল্প ব্যবহারযোগ্য সীমিত সম্পদের সম্পর্ক বিষয়ক মানব আচরণ নিয়ে আলোচনা করে।"
এল.রবিন্সের সংজ্ঞাটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে,
এটি মানব জীবনের তিনটি মৌলিক বৈশিষ্টের উপর প্রতিষ্ঠিত, যথা অসীম অভাব, সীমিত সম্পদ ও বিকল্প ব্যবহারযোগ্য সম্পদ।
অর্থনীতিবিদ Samuelson & Norfhaus এর মতে, “কীভাবে মানুষ ও সমাজ অর্থ দ্বারা ও অর্থ ব্যতীত দুস্পাপ্য সম্পদকে বিভিন্ন উৎপাদন কাজে নিয়োগের জন্য নির্বাচন করে এবং সমাজ ও জনসাধারণ বর্তমান ও ভবিষ্যতের ভোগের নিমিত্তে বন্টন করে তার আলোচনাই হলো অর্থনীতির বিষয়বস্তু।”
অর্থনীতিবিদ জন স্টুয়ার্ডমিল এর মতে, “Economics is the science which traces the laws of such of the phenomena of society as arise from the combined operations of mankind for the production of wealth, in so far as those phenomena are not modified by the pursuit of any ohter object.”
আধুনিক অর্থনীতিবিদ Prof. A.C. Cairncross বলেন, “অর্থনীতি এমন একটি সামাজিক বিজ্ঞান, যা মানুষ কীভাবে বিনিয়মের মাধ্যমে তাদের অভাবের সাথে দুষ্প্রাপ্যতার সমন্বয় সাধন করার চেষ্টা করে তা আলোচনা করে।”
অ্যাডাম স্মিথ তার Wealth of Nation গ্রন্থে বলেন, “অর্থনীতি হলো এমন একটি বিজ্ঞান যা জাতিসমূহের সম্পদের প্রকৃতি ও কারণ সম্পর্কে অনুসন্ধান করে।
J.B Say s এর মতে, Economics is Such a Science Which Deals With Wealth অর্থাৎ অর্থনীতি এমন এক বিজ্ঞান যা সম্পদ নিয়ে আলোচনা করে।
J.S Mills এর মতে, অর্থনীতি এমন একটি ব্যবহারিক বিজ্ঞান যা সম্পদের উৎপাদন ও বন্টন নিয়ে আলোচনা করে।
Pual A. Samuelson তার বিখ্যাত গ্রন্থ Welfare এ বলেন, মানুষ কীভাবে অর্থ দ্বারা ও অর্থ ছাড়া দুষ্প্রাপ্য সম্পদের বিভিন্ন উৎপাদন কজে নিয়োগের জন্য নির্বাচন করে এবং কীভাবে সমাজ ও জনগন ভবিষ্যতে ভোগের আশায় বন্টন করে তার আলোচনাই অর্থনীতির বিষয়বন্তু।
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, অর্থনীতি এমন একটি সামাজিক বিজ্ঞান যা মানুষের অসীম অভাব এবং বিকল্প ব্যবহারযোগ্য সীমিত সম্পদের মধ্যে সমন্বয় সাধনকারী কার্যাবলী পর্যোলোচনা করে।
আরো পড়ুন.....
- রচনাবিক বিদ্যুৎকor nuclear power plant. সমস্যা ও সম্ভাবনা
- অর্থনৈতিক অঞ্চল/Economic Zone/অর্থনৈতিক অঞ্চল ও শিল্প বিপ্লব অপার সম্ভাবনার নয়া দিগন্ত
- চতুর্থ শিল্প বিপ্লব কী? চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে কিভাবে বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারে?what is 4IR?
Comments
Post a Comment