সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য আলোচনা করো? || সাধু ও চলিত ভাষার মৌলিক পার্থক্য উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো? || সাধু ও চলিত ভাষার সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য আলোচনা করো?
সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য আলোচনা করো || সাধু ও চলিত ভাষার মৌলিক পার্থক্য উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো || সাধু ও চলিত ভাষার সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য আলোচনা করো:
সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য:
বাংলা ভাষার দুটি রূপ—সাধু ভাষা ও চলিত ভাষা। ব্যবহার ও লেখার বিচারে ও বাংলা ভাষা দু’ভাবে ব্যবহার হয়। দুটি রূপের মধ্যে যেমন প্রকৃতিগত সাদৃশ্য রয়েছে, তেমনি পার্থক্যও রয়েছে।
নিচে এ দুয়ের পার্থক্য আলোচনা করা হলো-
১। যে ভাষায় সাধারণত সাহিত্য রচিত হয় এবং যা মার্জিত ও সর্বজনস্বীকৃত, তাই সাধু ভাষা।
১। শিক্ষিত লোক সাধারণ কথাবার্তায় যে ভাষা ব্যবহার করে থাকে, তা-ই চলিত ভাষা।
পক্ষান্তরে
সাধু ভাষা ব্যাকরণের সুনির্দিষ্ট ও সুনির্ধারিত নিয়মের অনুসারী।
২। সাধু ভাষা ব্যাকরণের সুনির্দিষ্ট ও সুনির্ধারিত নিয়মের অনুসারী।
পক্ষান্তরে
চলিত ভাষার সুনির্ধারিত ব্যাকরণ আজও তৈরি হয়নি।
চলিত ভাষার সুনির্ধারিত ব্যাকরণ আজও তৈরি হয়নি।
৩। সাধু ভাষা গুরুগম্ভীর ও আভিজাত্যের অধিকারী।
পক্ষান্তরে
চলিত ভাষা সহজ ও স্বাভাবিক। মনোভাব প্রকাশে বিশেষ উপযোগী।
৪।সাধুভাষায় সর্বনাম পদ পূর্ণরূপে ব্যবহৃত হয়।
পক্ষান্তরে
চলিত রীতিতে সর্বনামগুলো সংকুচিত রূপে ব্যবহৃত হয়। যেমন- এ, সে, এরা, তারা ইত্যাদি।
৫। সাধু ভাষা অপরিবর্তনীয়।
পক্ষান্তরে
চলিত ভাষা পরিবর্তনশীল।
৬। সাধু ভাষা কৃত্রিম।
পক্ষান্তরে
চলিত ভাষা কৃত্রিমতা-বর্জিত।
৭। সাধু ভাষা নাটকের সংলাপ, আলাপ-আলোচনা ও বক্তৃতায় তেমন উপযোগী নয়।
পক্ষান্তরে
চলিত ভাষা নাটকের সংলাপ, আলাপ-আলোচনা ও বক্তৃতায় বেশ উপযোগী।
৮। সাধু ভাষায় ক্রিয়া ও সর্বনাম পদগুলো সাধারণত দীর্ঘ হয়। যেমন—খাইতেছি, তাহারা ইত্যাদি
পক্ষান্তরে
চলিত ভাষায় ক্রিয়া এবং সর্বনাম পদগুলো সংক্ষিপ্ত।
যেমন—খাচ্ছি, তারা ইত্যাদি।
৯। সাধু ভাষায় তৎসম শব্দের প্রয়োগ বেশি।
পক্ষান্তরে
এ ভাষায় অর্ধতৎসম, তদ্ভব, দেশি ও বিদেশি শব্দের প্রয়োগ বেশি।
১০। এ ভাষা প্রাচীন।
পক্ষান্তরে
এটি আধুনিক।
১১।এ ভাষা ধীর, মন্থর ও অচঞ্চল।
পক্ষান্তরে
চলিত ভাষা গতিশীল ও জীবন্ত।
১২। সাধু ভাষায় অপনিহিত ও অভিশ্রুতির ব্যবহার নেই।
পক্ষান্তরে
চলিত ভাষায় এদের প্রয়োগ লক্ষণীয়।
১৩। এ ভাষা কোনো অঞ্চল বিশেষের প্রভাবাধীন নয়।
পক্ষান্তরে
এ ভাষা আঞ্চলিক প্রভাবাধীন
১৪।সাধু রীতিতে অনুসর্গ হচ্ছে- জন্য, হইতে, থাকিয়া, চাইতে ইত্যাদি।
পক্ষান্তরে
চলিত রীতিতে অনুসর্গ হচ্ছে- জন্যে, হতে, থেকে, চেয়ে ইত্যাদি।
১৫। সাধু ভাষায় সন্ধি সমাসের আধিক্য লক্ষণীয়।
পক্ষান্তরে
চলিত ভাষায় সন্ধি সমাস বর্জন করে সহজ করে লেখার প্রবণতা লক্ষণীয়।
১৬।সাধু ভাষা বহু ভাষা প্রশংসিত।
পক্ষান্তরে
চলিত ভাষা মিত ভাষা আদৃত।
১৭। উদাহরণ:
সাধু ভাষা-তোমাকে কাছে পাইয়া আমি ধন্য হইলাম।
পক্ষান্তরে
চলিত ভাষা-তোমাকে কাছে পেয়ে আমি ধন্য হলাম।
আর ও পড়ুন...
Comments
Post a Comment