চাহিদা সূচী(Demand Schedule) ও চাহিদা রেখা (Demand Curve) কাকে বলে?।। চাহিদা সূচী ও রেখার পার্থক্য?।। What is Demand Schedule and Demand Curve? Difference between Demand Index and Demand Line?
চাহিদা সূচি ও চাহিদা রেখা কি
দ্রব্যের দাম এবং চাহিদার পরিমাণের মধ্যকার সম্পর্ক যখন তালিকার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তখন তাকে চাহিদা সূচি বলা হয় এবং দ্রব্যের দাম এবং চাহিদার পরিমাণের মধ্যকার সম্পর্ক যখন রেখাচিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তখন তাকে চাহিদারেখা বলা হয়।
A demand schedule is a table that shows the quantity demanded at each price. A demand curve is a graph that shows the quantity demanded at each price.
অর্থাৎ চাহিদা
সূচি ও চাহিদা রেখা মূলত চাহিদা
বিধি প্রকাশের দুটি ভিন্ন পদ্ধতি মাত্র।
চাহিদা সূচি (Demand Schedule)
অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত রেখে কোন ভোক্তা নির্দিষ্ট সময়ে বিভিন্ন দামে একটি দ্রব্যের যে পরিমাণ ক্রয় করে তার সংখ্যাত্নক প্রকাশ বা তালিকাকে চাহিদা সূচি (Demand Schedule) বলে। ভোক্তা সাধারণত: কম দামে একটি দ্রব্য বেশী পরিমাণে এবং বেশী দামে ঐ দ্রব্যটি কম পরিমাণে ক্রয় করে। অন্য কথায় আমরা বলতে পারি, চাহিদা সূচি হলো চাহিদা বিধির গাণিতিক প্রকাশ।
চালের দাম (টাকা প্রতি কেজি) | চাহিদার পরিমান (কেজি) |
৩০ | ১০ |
২৮ | ১৫ |
২৬ | ২০ |
২৪ | ২৫ |
এই সূচী থেকে দেখা যায় যে, যখন প্রতি কেজি চালের দাম ৩০ টাকা তখন চালের চাহিদার পরিমাণ ১০ কেজি, দাম কমে যখন ২৮ টাকা হয়, তখন চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে ১৫ কেজি হয়েছে। চালের দাম আরো কমে যখন ২৬ টাকা হয় তখন চাহিদার পরিমাণ হলো ২০ কেজি এবং দাম যখন কমে ২৪ টাকা হয় তখন চাহিদার পরিমাণ হলো ২৫ কেজি। এভাবে কোন ভোক্তা বা ক্রেতা বিভিন্ন দামে একটি দ্রব্যের যে পরিমাণ ক্রয় করে তার তালিকাকে চাহিদা সূচি বলে।
চাহিদা রেখা(Demand Curve)
যে রেখার সাহায্যে দ্রব্যের দাম ও চাহিদার পরিমাণের মধ্যে বিপরীত সম্পর্ক প্রকাশ করা হয় সেই রেখাই চাহিদা রেখা। চাহিদা সূচির মধ্যে দাম ও চাহিদার সম্পর্কে আমরা যে তথ্য পাই, তাকে রেখার সাহায্যে প্রকাশ করলে চাহিদা রেখা পাওয়া যায়। চাহিদা রেখা দ্রব্যের বিভিন্ন দাম ও সেই বিভিন্ন দামে দ্রব্য ক্রয়ের পরিমাণ দেখায়।
একটি চাহিদা রেখা নিচে অঙ্কন করা হলো-
চাহিদা রেখা |
চিত্রে OX অক্ষে চাহিদার পরিমাণ এবং OY অক্ষে দ্রব্যের দাম দেখানো হয়েছে। দ্রব্যের দাম যখন ৫ টাকা তখন দ্রব্যের চাহিদা ২০০ একক হয়। যাদের সমন্বয় বিন্দু a। এখন দ্রব্যের দাম হ্রাস পেয়ে ৪ টাকা হলে দ্রব্যের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে ৪০০ একক হয়। তখন তাদের সমন্বয় বিন্দু ৮। অনুরূপভাবে, দ্রব্যের দাম আরও হ্রাস পেয়ে ৩ টাকা, ২ টাকা ও ১ টাকা হলে চাহিদার পরিমাণ যথাক্রমে ৬০০ একক, ৮০০ একক ও ১০০০ একক হয়। এক্ষেত্রে সমন্বয় বিন্দুসমূহ যথাক্রমে c, d ও e পাওয়া যায়। এভাবে সমন্বয় বিন্দুসমূহ a, b, c, d ও e দ্রব্যের দাম ও ক্রয়ের পরিমাণের মধ্যে সম্পর্ক দেখায়। এখন a, b, c, d, e বিন্দু যোগ করে DD1 যে রেখা পাওয়া যায়, তাই চাহিদা রেখা।
চাহিদা সূচি ও চাহিদা রেখার পার্থক্য
দ্রব্যের দাম এবং চাহিদার পরিমাণের মধ্যকার সম্পর্ক যখন তালিকার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তখন তাকে চাহিদা সূচি বলা হয় এবং দ্রব্যের দাম এবং চাহিদার পরিমাণের মধ্যকার সম্পর্ক যখন রেখাচিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তখন তাকে চাহিদারেখা বলা হয়। অর্থাৎ চাহিদা সূচি ও চাহিদা রেখা মূলত চাহিদা বিধি প্রকাশের দুটি ভিন্ন পদ্ধতি মাত্র। এদের মধ্যে কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
চাহিদা
সূচী ও রেখার মধ্যে পার্থক্য কি?
ক্র:নং |
সূচি |
চাহিদা রেখা |
১ |
দ্রব্যের মূল্য ও
চাহিদার মধ্যকার বিপরীত সম্পর্ক যখন তালিকার মাধ্যমে দেখানো হয়, তাই চাহিদা
সূচি। |
চাহিদা সূচি যখন
রেখার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তাকে চাহিদা রেখা বলে । |
২ |
ভোক্তার আচরণের ওপর ভিত্তি করে চাহিদা সূচি তৈরি করা হয়। |
পক্ষান্তরে, চাহিদা
সূচির ওপর ভিত্তি করে চাহিদা রেখা অঙ্কন করা হয়। |
৩ |
অন্যদিকে,
চাহিদা সূচি, চাহিদা অপেক্ষকের ওপর নির্ভরশীল। |
চাহিদা
রেখা চাহিদা সমীকরণের ওপর নির্ভরশীল। |
৪ |
ভোক্তা বিভিন্ন
দামে বিভিন্ন পরিমাণ দ্রব্য ক্রয় করতে ইচ্ছুক চাহিদা সূচি তাই প্রকাশ করে। |
নির্দিষ্ট দামে
ভোক্তা দ্রব্যের কি পরিমাণ কিনতে ইচ্ছুক চাহিদা রেখা তাই প্রকাশ করে। |
৫ |
চাহিদা সূচি
গাণিতিকভাবে তালিকার মাধ্যমে দেখানো হয়। |
চাহিদা রেখা
জ্যামিতিকভাবে দেখানো হয়। |
৬ |
চাহিদা সূচির
একদিকে দ্রব্যের প্রতি এককের দাম এবং তদনুযায়ী দ্রব্যের কত একক ক্রয় করা হলো তা
দেয়া থাকে। |
চাহিদা রেখার দু’টি
অক্ষ থাকে। একটি দামের অক্ষ এবং অপরটি
চাহিদার পরিমাণের অক্ষ। |
Comments
Post a Comment