অর্থনীতিতে অর্থ কি? || what is Money?|| অর্থ কাকে বলে? || অর্থের প্রকারভেদ আলোচনা কর? ||Discuss the Classification of money?
অর্থনীতিতে অর্থ কি? || what is Money?|| অর্থ কাকে বলে? || অর্থের প্রকারভেদ আলোচনা কর? ||Discuss the Classification of money?
অর্থঃ
দীর্ঘকাল যাবৎ কৃষক তার ধানের বিনিময়ে তাঁতির কাছ থেকে কাপড় এবং জেলে তার মাছের বিনিময়ে কুমারের কাছ থেকে হাঁড়ি - পাতিল সংগ্রহ করত । এভাবে মানুষ এক দ্রব্যের পরিবর্তে অন্য দ্রব্য বিনিময় করে অভাব পূরণ করার ব্যবস্থাকে সরাসরি পণ্য বিনিময় প্রথা ( Barter System ) বলে ।
আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে কোনাে কোনাে এলাকায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখনাে এ প্রথার প্রচলন দেখা যায় । তবে এ প্রথায় লেনদেন করতে গিয়ে মানুষকে নানা অসুবিধায় পড়তে হতাে ( যেমন- দ্রব্য বিভাজনে অসুবিধা ও পারস্পারিক অভাবের অমিল ইত্যাদি ) । এসব অসুবিধা দূর করতে অর্থের আবির্ভাব ঘটে ।
আধুনিক অর্থনীতিতে বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে অর্থ সর্বজনস্বীকৃত ও গৃহীত । অর্থ বিনিময়ের মাধ্যম , দ্রব্য ও সেবার মূল্যের পরিমাপক এবং সঞ্চয়ের বাহন হিসেবে কাজ করে ।
সুতরাং , সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত যে বস্তু মূল্যের পরিমাপক , দেনা - পাওনা মেটানাের উপায় হিসেবে সর্বত্র গ্রহণযােগ্য , সঞ্চয়ের বাহন ও কণের ভিত্তি হিসেবে স্বীকৃত , তাকে অর্থ বলে ।
বিভিন্ন দেশে অর্থ বিভিন্ন নামে পরিচিত । যেমন- বাংলাদেশে টাকা , ভারতে রুপি , আমেরিকায় ডলার এবং ইউরােপের অধিকাংশ দেশে ইউরাে ।
অর্থের প্রকারভেদঃ
তৈরির উপকরণের দিক থেকে অর্থকে দুভাগে ভাগ করা যায় ।
যথা ১ ) ধাতব মুদ্রা ও ২ ) কাগজি নােট
১.ধাতব মুদ্রাঃ
ধাতব খণ্ড দ্বারা তৈরি যে মুদ্রার মাধ্যমে মানুষ প্রাত্যহিক জীবনের লেনদেন করে , তাকে ধাতব মুদ্রা বলে । বাংলাদেশে ৫ টাকা , ২ টাকা , ১ টাকা , ৫০ পয়সা ইত্যাদি ধাতব মুদ্রা আছে ।
**ধাতব মুদ্রাকে বস্তুগত মূল্যমানের দিক থেকে আবার দুভাগে ভাগ করা যায় ।
যথা : ( ক ) প্রামাণিক মুদ্রা ( খ ) প্রতীক মুদ্রা ।
প্রামাণিক মুদ্রা বলতে বােঝায় যে মুদ্রা গলানাের মাধ্যমে ধাতু হিসেবে বিক্রি করলে দৃশ্যমান মূল্যের সমপরিমাণ মূল্য পাওয়া যায় ।
আর প্রতীক মুদ্রা বলতে বােঝায় , যে মুদ্রার ধাতব মূল্য তার দৃশ্যমান মূল্যের চেয়ে কম থাকে । সাধারণত ধাতব মুদ্রা সরকার কর্তৃক প্রচলিত হয় ।
যেসব মুদ্রা কাগজ দ্বারা তৈরি করা হয় , তাকে কাগজি মুদ্রা বা নােট বলে ।
নােটের উপর লিখিত মূল্যই তার মূল্যের নির্দেশক , যা সাধারণত নােটের কাগজটির মূল্য অপেক্ষা অধিক হয় । প্রায় সকল দেশেই কাগজি মুদ্রা বা নোট সরকারি নির্দেশে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক প্রচলিত হয় । বাংলাদেশের কাগজি মুদ্রা হলাে ১ টাকা , ২ টাকা , ৫ টাকা , ১০ টাকা , ২০ টাকা , ৫০ টাকা , ১০০ টাকা , ৫০০ টাকা ও ১০০০ টাকার নােট ।
কাগজি মুদ্রাকে দুভাগে ভাগ করা যায় । যথা-
( ক ) রূপান্তরযােগ্য মুদ্রা ( খ ) রূপান্তর অযােগ্য মুদ্রা
রূপান্তরযােগ্য মুদ্রা বলতে বুঝায় যে কাগজি নােটের পরিবর্তে চাওয়ামাত্র সরকার সমমূল্যের দেশীয় মুদ্রা দিতে বাধ্য থাকে । বাংলাদেশে রূপান্তরযােগ্য নােট হলো- ৫ টাকা , ১০ টাকা , ২০ টাকা , ৫০ টাকা , ১০০ টাকা , ৫০০ টাকা ও ১০০০ টাকার নােট ।
আর রূপান্তর অযােগ্য মুদ্রা বলতে বােঝায় যে কাগজি নােটের পরিবর্তে সরকারের কাছ থেকে কোনাে বৈদেশিক মুদ্রা , সােনা , রুপা পাওয়া যায় না ।
>>> গ্রহণের বাধ্যবাধকতার দিক থেকে অর্থকে আবার দুভাগে ভাগ করা যায় ।
যথা : ১ ) বিহিত অর্থ ২ ) ব্যাংক হিসাব বা ব্যাংক সৃষ্ট অর্থ ।
বিহিত অর্থ যে অর্থ সরকারি আইন দ্বারা প্রচলিত , তাকে বিহিত অর্থ বলে । আমাদের দেশের বিহিত অর্থ সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক প্রচলিত ধাতব মুদ্রা ও কাগজি নােট নিয়ে গঠিত ।
**বিহিত অর্থকে দুভাগে ভাগ করা যায়
ক ) অসীম বিহিত অর্থ
খ ) সসীম বিহিত অর্থ ।
অসীম বিহিত অর্থ বলতে বােঝায় , যে বিহিত অর্থ দ্বারা আইনগত যেকোনাে পরিমাণ লেনদেন করা যায় এবং দেনা - পাওনা পরিশােধ করলে পাওনাদার তা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকে । আমাদের দেশের অসীম বিহিত অর্থ হলাে- ৫ টাকা , ১০ টাকা , ২০ টাকা , ৫০ টাকা , ১০০ টাকা , ৫০০ টাকা ও ১০০০ টাকার নােট ।
সসীম বিহিত অর্থ বলতে বােঝায় , যে বিহিত অর্থ দ্বারা একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত লেনদেন করা যায় , আইনগতভাবে জনগণকে অধিক গ্রহণে বাধ্য করা যায় না এবং জনগণ তার ইচ্ছা অনুযায়ী তা গ্রহণ করতে পারে । আমাদের দেশের সসীম বিহিত অর্থ হলাে- ৫০ পয়সা , ১ টাকা , ২ টাকা ও ৫ টাকার ধাতব মুদ্রা ।
আর ও পড়ুন...
- মরিচা কি ? মরিচা প্রতিরােধের উপায় কি ? || What is rust? What is the way to prevent rust? || মরিচা প্রতিরোধে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত?
- অভাব কাকে বলে?||অভাব কী?|| what is deficience?|| অভাব বলতে কি বোঝায়?|| অর্থনীতিতে অভাব বলতে কি বোঝায়?|| অভাবের বৈশিষ্টসমূহ কি কি ?||What are the characteristics of deficiency?
Comments
Post a Comment