ই - সার্ভিস কি? || ই -সেবা কি? বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কিছু ই - সার্ভিস আলেচনা কর? || (What is e-service)
ই - সার্ভিস কি||ই -সেবা কি ||বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কিছু ই - সার্ভিস আলোচনা কর ||(What is e-service)
ই - সার্ভিস :
ই সার্ভিস এর পূর্ণ রুপ হলো ইলেক্ট্রনিক সার্ভিস।আর ই সার্ভিস বিভিন্ন অনলাইন সেবাকে বুঝায়।
ইন্টারনেট অনলাইনে আপনি যে সেবা পাবেন তাই ই হচ্ছে ই সার্ভিস বা ইললেক্ট্রিক সেবা।
যেমনঃআগে পরিক্ষার রেজাল্ট আনতে স্কুলে যেতে হত আর এখন মোবাইলের সাহায্যে আনতে পারা যায়।
সরকারি এবং বেসরকারি অনেক সেবামূলক সংস্থা সার্বক্ষণিকভাবে অথবা সময়ে সময়ে দেশের জনগণকে বিভিন্ন সেবা প্রদান করে থাকে । এই সেবা হতে পারে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত কিংবা কোনাে জমির দলিলের নকল সরবরাহ করা । ডিজিটাল পদ্ধতি চালু হওয়ার পূর্বে এই সকল সেবার ক্ষেত্রে সেবাগ্রহীতাকে অবশ্যই সেবাদাতার সঙ্গে সরাসরি যােগাযােগ করতে হতাে । কিন্তু ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেবাগ্রহীতা নিজ বাড়িতে বসেই মােবাইল ফোনে বা ইন্টারনেটে একই সেবা গ্রহণ করতে পারে ।
উদাহরণ হিসাবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য কোনাে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট সংগ্রহের কথা বিবেচনা করা যায় । কিছুদিন পূর্বেও এই টিকেট সংগ্রহের জন্য যাত্রী নিজে অথবা তার কোনাে লােকের ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে , লাইনে দাঁড়িয়ে নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে টিকেট সংগ্রহ করতে হতাে । এই পদ্ধতি এখনও বহাল আছে । তবে , এর পাশাপাশি এখন যে কেউ অনলাইনে টিকেট সংগ্রহ করতে পারে । অনলাইনেই টিকেটের মূল্য পরিশােধ করা যায় । এভাবে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে সেবা প্রদানের ব্যাপারটি ই - সার্ভিস বা ই - সেবা হিসেবে চিহ্নিত করা যায় ।
ই - সার্ভিস ও বাংলাদেশ :
ই - সেবার প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য হলাে - এটি স্বল্প খরচে , স্বল্প সময়ে এবং হয়রানিমুক্ত সেবা নিশ্চিত করে ।
বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় , বিভাগ ও অধিদপ্তরসমূহের উদ্যোগে ইতােমধ্যেই অনেক ই - সেবা চালু হয়েছে । এর মধ্যে উল্লেখযােগ্য হলাে পাঠ্যপুস্তকের ডিজিটাল সংস্করণ , ই - পৃর্জি , ই - পর্চা , ই - টিকেট , টেলিমেডিসিন , অনলাইন আয়কর হিসাব করার ক্যালকুলেটর ইত্যাদি ।
নিম্নে কয়েকটি উল্লেখযােগ্য ই - সেবা কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হলাে -
(ক) ই - পূর্জি :
দেশের প্রথম দিককার ই - সেবাসমূহের একটি । দেশের ১৫ টি চিনিকলের সকল আখচাষি এখন এসএমএসের মাধ্যমে পূর্জি তথ্য পাচ্ছে।পূর্জি হচ্ছে চিনিকলসমূহে কখন আখ সরবরাহ করতে হবে সে জন্য আওতাধীন আখচাষিদের দেওয়া একটি অনুমতিপত্র । এসএমএসের মাধ্যমে আখচাষিরা তাৎক্ষণিকভাবে পূর্জির তথ্য পাচ্ছে বলে এখন তাদের হয়রানি ও বিড়ম্বনার অবসান হয়েছে । পাশাপাশি সময়মতাে আখের সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ায় চিনিকলের উৎপাদনও বেড়েছে ।
(খ) ইলেকট্রনিক মানি ট্রান্সফার সিস্টেম ( ই - এমটিএস ) :
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ইলেকট্রনিক মানি ট্রান্সফার সিস্টেমের মাধ্যমে দেশের এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে নিরাপদে , দ্রুত ও কম খরচে টাকা পাঠানাে যায় । ১ মিনিটের মধ্যে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পাঠানাে যায় । দেশের প্রায় সকল ডাকঘরে এই সেবা পাওয়া যায় । তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি ও আমাদের বাংলাদেশ
(গ) ই - পৰ্চা সেবা :
বর্তমানে দেশের সকল জমির রেকর্ডের অনুলিপি অনলাইনে সংগ্রহ করা যায় । এটিকে বলা হয় ই - পর্চা । পূর্বে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মীগণ বড় বড় রেকর্ড বই থেকে তথ্যসমূহ পূর্ব নির্ধারিত ছকে পূরণ করে আবেদনকারীকে সরবরাহ করতেন । এজন্য আবেদনকারীকে যেমন সরাসরি উপস্থিত হতে হতাে তেমনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মীরাও গতানুগতিক পদ্ধতিতে পর্চা তৈরি করতেন । বর্তমানে এটি ই - সেবার আওতায় আসাতে আবেদনকারী দেশ - বিদেশের যেকোনাে স্থান থেকেই নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে পর্চা সংগ্রহ করতে পারেন ।
(ঘ) ই - স্বাস্থ্যসেবা :
বিভিন্ন সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত চিকিত্সকরা এখন মােবাইল ফোনে স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন । এজন্য দেশের সকল সরকারি হাসপাতালে একটি করে মােবাইল ফোন দেওয়া হয়েছে । দেশের যেকোনাে নাগরিক এভাবে যেকোনাে চিকিৎসকের পরামর্শ পেতে পারেন । এছাড়া দেশের কয়েকটি হাসপাতালে টেলিমেডিসিন সেবা চালু হয়েছে । এর মাধ্যমে রােগী হাসপাতালে না এসেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা ও পরামর্শ পাচ্ছেন ।
(ঙ ) রেলওয়ের ই - টিকেটিং ও মােবাইল টিকেটিং:
বাংলাদেশ রেলওয়ের কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট এখন মােবাইল ফোনেও ক্রয় করা যায় । আবার অনলাইনেও টিকেট সংগ্রহের ব্যবস্থা রয়েছে । ফলে , নিজের সুবিধামতাে সময়ে রেলস্টেশনে না গিয়েও নির্দিষ্ট গন্তব্যের টিকেট সংগ্রহ সব হচ্ছে । মােবাইল ফোন বা অনলাইনে টিকেট সংগ্রহ করা হলে ট্রেন ছাড়ার অল্প সময় পূর্বে যাত্রীকে স্টেশনে যেতে হয় এবং মােবাইল ফোন বা অনলাইনে প্রাপ্ত গােপন নম্বর প্রদর্শন করে সেখানে নির্ধারিত কাউন্টার থেকে যাত্রার টিকেট সংগ্রহ করে নিতে হয় ।
আর ও পড়ুন...
Comments
Post a Comment